সরকার ঘুর্ণিঝড় আম্ফান মোকাবেলায় প্রস্তুত: প্রধানমন্ত্রী
- জাতীয় - সরকার
- ২০ মে ২০২০ - ৫ বছর আগে
- পড়া হয়েছে - ৩২৪০৪
ঢাকা, ২০ মে ২০২০, বুধবার: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, "সরকার ঘুর্ণিঝড় আম্ফান মোকাবেলায় প্রস্তুত রয়েছে। মানুষের জান-মাল রক্ষার জন্য আমরা আরো সম্ভাব্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।" প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাউন্সিলের (এনডিএমসি) সভায় একথা বলেন।
শক্তিশালী এ প্রলয়ংকারী সম্ভাব্য ভয়াবহ আম্ফানের সম্ভাব্য সাইক্লোনের আঘাত থেকে মানুষের জান-মাল রক্ষার্থে সরকারি উদ্যোগ, গৃহীত পদক্ষেপ এবং সর্বশেষ পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য এ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই সভার আয়োজন করা হয়।
এ দূর্যোগ একটি প্রাকৃতিক ঘটনা, এ কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "যেখানে মানুষের কোন হাত নেই, এর থেকে মানুষের জান-মাল রক্ষার জন্য মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে অনুগ্রহ প্রার্থনা করুন।" সামগ্রিক প্রস্তুতি ও আয়োজনে প্রধানমন্ত্রী সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ বিভাগ সহ সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগ ও ব্যক্তিদের ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, "পূর্ব প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এ পর্যন্ত ২০ লাখ মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে এবং এজন্য ১৩ হাজার ২৪১টি সাইক্লোন শেল্টার সেন্টার খোলা হয়েছে।’ বর্তমান চলিত করোনাকালের দূর্যোগকে স্মরণ করে তিনি আসন্ন ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের আক্রমণ প্রসঙ্গে বলেন, "এই বিপর্যয়টা এমন সময়ে এসেছে যখন আমরা করোনাভাইরাস বিপর্যয়কে দূর করার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবুও এই সাইক্লোন মোকাবেলায় সরকারের ব্যাপক প্রস্তুতি রয়েছে।"
প্রধানমন্ত্রী বলেন, "তাঁর সরকার যখনই কোন দুর্যোগের পূর্বাভাস পেয়েছে, তখনই দ্রুত সাড়া দিয়েছে, প্রতিটি মানুষের জান-মাল রক্ষার্থে ব্যবস্থা নিয়েছে, যা অতীতের কোন সরকারই করেনি।"
তিনি আরো বলেন, "১৯৯১ সালের প্রলয়ংকারি ঘুর্ণিঝড় যখন দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলীয় জেলাগুলোতে আঘাত হানে তখন ক্ষমতাসীন বিএনপি সরকার কোন ব্যবস্থাই গ্রহণ করেনি, এমনকি তারা দুর্যোগের কোন তথ্য রাখারও প্রয়োজন মনে করনি। যেখানে হাজার হাজার মানুষ নিহত, বিমান বাহিনীর বিমান, নৌবাহিনীর জাহাজ এবং ব্যাপক জনসম্পত্তি বিনষ্ট হয়।"
তৎকালিন বিরোধী দল... আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ঘুর্ণি দুর্গত মানুষের দ্বারে দ্বারে ত্রাণ নিয়ে যায়, সরকারের আগেই তাঁরা মাছ ধরার নৌকায় করেও দুর্গম চরাঞ্চলে ত্রাণ পৌঁছে দেয়।"
প্রধানমন্ত্রী বলেন, "১৯৯৬ সালে সরকারে আসার পরে তাঁর সরকার বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করে মানুষকে জানানোর উদ্যোগ নেয় যে, এ ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় কি করতে হবে। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসেই আমরা দেখতে পাই দেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের কোন আধুনিক যন্ত্রপাতি নেই কাজেই এর আধুনিকায়ন এবং যুগোপযোগীকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করি।"
স্যাটেলাইট স্থাপনের সুবিধা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "দুর্যোগ সম্পর্কিত আগাম তথ্য এখন স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হচ্ছে এবং সেই তথ্য তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণে আন্তর্জাতিকভাবে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।"
শেখ হাসিনা বলেন, "সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি সরকারী দল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বিভিন্ন দুর্যোগকালিন জনগণকে খাদ্য, ওষুধসহ অন্যান্য ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দিতে কাজ করে যাচ্ছে।" তিনি নিজ দলীয় সর্বস্তরের নেতৃবৃন্দকে বোরো ধান কেঁটে কৃষকদের সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ দিয়ে বলেন, "এটাই অত্যন্ত আশার বিষয় যে, প্রায় ৯০ শতাংশ বোরো ধান গোলায় উঠেছে ঘুর্ণিঝড় আম্ফান আঘাত হানার আগে।"
ভৌগলিক অবস্থানগত কারণেই বাংলাদেশকে সাংবাৎসরিক বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করেই সামনে এগিয়ে যাবার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, "দুর্যোগ ঝুঁকি প্রশমন এবং দুর্যোগকালিন জনগণের জান-মালের ক্ষয়-ক্ষতি কমিয়ে আসার ক্ষেত্রে বাপক সাফল্য অর্জন করেছে, যা আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলেও স্বীকৃতি লাভ করেছে।"
বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন,"বঙ্গবন্ধু মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা বিধানে মুজিব কেল্লা নির্মাণসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। জাতির পিতা রেড ক্রসের সহায়তায় যেকোন দুর্যোগ মোকাবেলায় ৪৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবকের একটি বাহিনী গড়ে তোলেন।
সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রীগণ, মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং তিন বাহিনীপ্রধানগণ সচিবালয় থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এ সময় গনভবন প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য